খন্দকার রবিউল ইসলাম: রাজবাড়ী সিআইডি তে কনেস্টবল পদে কর্মরত ছিলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন হাসান হঠা ৎ করেই তাকে কক্সবাজার বদলি করা হয়েছে। আর এ হঠা ৎ বদলির কারন হিসেবে হাসান বলছেন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থান নেওয়ার কারনে ই তাকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে সিনিয়র কিছু অসুদু মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতাকারী অফিসারের নির্দেশ এ।
এমন ভাবেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তার ফেসবুক আইডি র টাইমস লাইনে কষ্ট ভরা কিছু কথা তুলে ধরেছেন দেশ ও জাতির কাছে।।
আর কথা না বাড়িয়ে আসুন পড়ে নেওয়া যাক সিআইডি কনেস্টবল হাসান কি লিখেছেন তাল আইডিতে।।
আমার মতো পুড়া কপাল আর যেন কারো না হয়। কারন আমরা গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিম্নপদস্থ কর্মচারী। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি না আমাদের উপরে থাকা কিছু রক্ত পিচাসু, সমাজের কীট হাতে গুনা গুটি কয়েক অফিসারদের জন্য।
তাদের পকেট মোটা করতে নিজেদের সার্থের কারনে আমাদের গলায় ছুড়ি ধরে জবাই করতেও বিন্দু পরিমানে মায়া হয় না। তারই একটা জলন্ত প্রমান আমি নিজেই।
কারন আমাদের কথা শোনার মতো যে কেহ নেই। গরীবের সন্তান চাকরী চলে যাওয়ার ভয়ে মুখ খুলতে পারিনা। আবার চাকুরীর শুরু থেকেই শুনে আসছি পানি সব সময় নিজের দিকে গড়ে।
কিন্তু কি করবো তবুও যে সমাজ, জাতি, দেশকে ভয়ংকর নেশা মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে হবে মনে করেই ঝাঁপিয়ে পরলাম রাজবাড়ী জেলায়। নিজের মনের সাথে চ্যালেঞ্জ করে এবং কিছু আত্মীয় স্বজন, ভাই, বন্ধু, পরিজনদের সাথে আলোচনা করে আগামী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়ংকর নেশা মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে।
কিন্তু সামান্য কিছু হাতে গুনা দু-এক জন অসাধু মাদক ব্যবসায়ী আর সাথে আমাদের পুলিশের ২/৩ জন পুলিশ অফিসার শলা-পরামর্শ, যোগসাজশে আমাকে রাজবাড়ী জেলা থেকে এতো ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে সবশেষে পাঠিয়ে দিল কক্সবাজার জেলায়।
কি ছিল আমার অপরাধ? মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলাম এটাই কি ছিল মুল কারন না-কি অন্য কিছু? রাজবাড়ী জেলা থেকে পর পর চার বার আমাকে বদলী করা হয় কিন্তু কেন? আমাকে রাজবাড়ী জেলা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিটা সময়, প্রতিটা মুহুর্ত আমাকে মিথ্যা বদনাম দিয়ে হয়রানি করানো হয়েছে কিন্তু কেন? যে কোন বিষয়ে বদনাম হলেই যখনই আমি প্রতিবাদমুখি হয়ে উঠি তখনই বিষয়টি চাপা পরে গেছে।
কে শুনবে আমার মতো একজন অসহায় পুলিশ কনেষ্টবলের আর্তনাদ? জানি কেও শুনবে কারন আমরা নিম্ন কর্মচারী। তাই তো পারলাম না মনের স্বপ্ন টাকে পুরুন করতে। পারলাম না রাজবাড়ী জেলা থেকে মাদক মুক্ত করতে। কিন্তু আজ যে আমি বড় অসহায়।
পৃথীবিতে চোখে দেখার সবাই আছে কিন্তুু বিপদে-আপদে আমার অসুস্থ স্ত্রী, স্কুল পড়ুয়া শিশু কন্যা সন্তান আর আমি, এই তিনটি ব্যক্তির যে দুনিয়াতে কষ্ট দুঃখ বোঝার মতো কেও নেই। সাড়াটা জীবন শুনেছি সত্যের জয় হয়, ভাল কাজের ফল পাওয়া যায়।
কিন্তু আমার বেলায় এটা কি হলো? নাকি ফেসবুকে (আসুন আমরা সবাই সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই) এই পেজটাই আমাকে আজ কক্সবাজার জেলায় মৃত্যুর মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে? তা-না হলে ঘড়ে অসুস্থ স্ত্রী,শিশু কন্যা সন্তানকে রেখে আমি আজ কতোদুরে, কক্সবাজার জেলা থেকে রাজবাড়ী যেতে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগে আবার যাতায়াত ভাড়া দুই থেকে তিন হাজার টাকা।
এটাই কি তাহলে মাদক নির্মুলে ভাল কাজের ফল? শতো কষ্ট প্ররিশ্রম করে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী, চিন্হিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার করেছি তার বিনিময় আমি পেয়েছি মিথ্যা অপবাদ আর অবহেলা,,আর আমার কাজের ফল আমার রাজবাড়ীর ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মহোদয় হেড অফিস থেকে পুরস্কার (ক্রেচ) নিয়ে আসে।
সবই নিয়মনীতি কোন কষ্ট ছিলনা মনে কিন্তু কক্সবাজার জেলায় বদলী করার মতো কি অপরাধ ছিল আমার? ছোট পদে চাকুরী করি লাত্থি গুতা সহ্য করে চাকুরী টা করছিলাম কিন্তু জীবনে কি এমন পাপ করেছিলাম যে তারজন্য এমন অমানবিক বিচার করলো বিধাতা আমার উপর? তবুও দোয়া করে যায় অসাধু সেই লোক গুলোর জন্য যে মানুষ গুলো আমার মতো একজন সামান্য পুলিশ কনেষ্টবলকে রাজবাড়ী থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র/জুনিয়র অফিসার গুলোর অস্থির করে রেখে ছিল।
তবে সেই মানুষ গুলির উদ্দেশ্যে বলিঃ-সমাজ টাকে, জাতি টাকে, দেশ টাকে, আগামী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নষ্ট করবেন না। বিধাতা কিন্তু আছে তিনিই সবকিছুর মালিক। তাহার চোখ ফাঁকি দিতে পারবেন না।
আমার লেখা পরে যদি কারো খারাপ লেগে থাকে পাঁয়ে ধরে অনুরোধ করছি আমাকে আর ক্ষতি করবেন না। আমি অনেক কষ্টে আছি, আমি অনেক বিপদে আছি, বর্তমানে জীবন্ত লাশের ন্যায় বেঁচে আছি। সবাই ভাল থাকবেন। ভুল ভ্রান্তি ও বেয়াদবি মাপ করবেন। আপনারা সবাই এই অসহায়, হতভাগার জন্য একটু সামান্য দোয়া করবেন,,,,খোদা হাফেজ।।