ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রামকান্তুপুর ইউয়িনের মোহনশাহ’র বটতলার গোল চত্বর এর উদ্বোধন রাজবাড়ীতে মাদকদ্রব্যর অপব্যবহার ও পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ও আলোচনা সভা রাজবাড়ীতে ডিবি পুলিশের অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী মোজাম্মেল আটক রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প (ফেইজ-২) বাস্তবায়ন বিষয়ক সাধারণ সমন্বয় সভা সন্ধ্যার মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে হবে-প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী রামকান্তপুর ইউনিয়ন ও পৌর নবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সোহেল রানা। ঈদুল ফিতর’ উপলক্ষে চন্দনী ইউনিয়বাসীর সুস্বাস্থ্য, সুখ-সমৃদ্ধি ও অনাবিল আনন্দ কামনা করে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন-শাহিনুর পৌরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুবলীগ নেতা মীর সজল জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষকেঈদের শুভেচ্ছা কাজী ইরাদত আলীর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ

বিজয় দিবসের দু’দিন পর হানাদার মুক্ত হয় রাজবাড়ী

কাজী তানভীর মাহমুদ-রাজবাড়ী টুডে: ১৮ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রাজবাড়ী জেলা হানাদার মুক্ত দিবস। রাজবাড়ীতে পাকিস্থানীদের দোসর অবাঙ্গালী বিহারীরা ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে অতিমাত্রায় তৎপর হয়ে ওঠে। তারা তখনও বুঝতে পারেনি পতন অনিবার্য। তারা সমস্ত শহর দখলে রাখে।

৯ই ডিসেম্বর শহরের লক্ষীকোল এলাকায় বিহারীদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

বিহারীদের গুলিতে সেইদিন রফিক, শফিক ও সাদিক শহীদ হন।

বিহারীরা ১৩ই ডিসেম্বর শহরের বিনোদপুর বিদ্যুত সরবরাহের প্রহরীকে হত্যা করে। ১৬ই ডিসেম্বর প্রায় সারা দেশে পাক বাহিনী আত্মসমর্পন করলেও রাজবাড়ী শহর তখনো অবাঙ্গালী বিহারীদের আয়ত্তে থাকে। তারা ঘোষনা দেয় সারাদেশ বাংলাদেশ হলেও রাজবাড়ী পাকিস্তান হয়ে থাকবে।

এ সময় জেলার সকল অঞ্চল থেকে মুক্তি বাহিনীর বিভিন্ন দল রাজবাড়ীতে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হতে থাকে। ইতোমধ্যে শহিদুন্নবী আলম, ইলিয়াস মিয়া, সিরাজ আহম্মেদ, আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, রফিকুল ইসলাম তাদের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিকে ঘিরে রাখে। এদের সাথে জেলার পাংশা থেকে জিল্লুল হাকিম, আব্দুল মতিন, নাসিরুল হক সাবু, আব্দুল মালেক, সাচ্চু, আব্দুর রব তাদের দল নিয়ে যুদ্ধে যোগদান করেন।

অবাঙ্গালী বিহারীরা শহরের রেল লাইনের উত্তর পাশে অবস্থান নেয়। তারা রেলওয়ে লোকোসেড থেকে ড্রাই আইস ফ্যক্টরী পর্যন্ত রেলের মালগাড়ী দিয়ে বাধা তৈরী করে।

মুক্তিবাহিনীরা শহরের দক্ষিণ দিক থেকে গুলি চালাতে থাকে। তবে মালগাড়ী থাকার কারণে কোন ফল হয় না। সে সময় গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান আবি মাগুরার শ্রীপুর থেকে মর্টার আনে। ওই মর্টার দিয়ে গুলি ছুড়লে বিহারীরা পিছু হটে। পরাজয় অনিবার্য মনে করে বিহারীরা আতœসমর্পন করার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর অভিমুখে যেতে থাকে। তবে তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কয়েক হাজার অবাঙ্গালী বিহারী নিহত হয়।

ওই যুদ্ধে দিয়ানত আলী শহীদ হন এবং ইলিয়াস হোসেন হন গুরুতর আহত। যে কারনে ১৮ই ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় রাজবাড়ী।

রাজবাড়ী মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে আজ ১৮ই ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

Meraj Gazi

জনপ্রিয় পোস্ট

রামকান্তুপুর ইউয়িনের মোহনশাহ’র বটতলার গোল চত্বর এর উদ্বোধন

বিজয় দিবসের দু’দিন পর হানাদার মুক্ত হয় রাজবাড়ী

আপডেটের সময় : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

কাজী তানভীর মাহমুদ-রাজবাড়ী টুডে: ১৮ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রাজবাড়ী জেলা হানাদার মুক্ত দিবস। রাজবাড়ীতে পাকিস্থানীদের দোসর অবাঙ্গালী বিহারীরা ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে অতিমাত্রায় তৎপর হয়ে ওঠে। তারা তখনও বুঝতে পারেনি পতন অনিবার্য। তারা সমস্ত শহর দখলে রাখে।

৯ই ডিসেম্বর শহরের লক্ষীকোল এলাকায় বিহারীদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

বিহারীদের গুলিতে সেইদিন রফিক, শফিক ও সাদিক শহীদ হন।

বিহারীরা ১৩ই ডিসেম্বর শহরের বিনোদপুর বিদ্যুত সরবরাহের প্রহরীকে হত্যা করে। ১৬ই ডিসেম্বর প্রায় সারা দেশে পাক বাহিনী আত্মসমর্পন করলেও রাজবাড়ী শহর তখনো অবাঙ্গালী বিহারীদের আয়ত্তে থাকে। তারা ঘোষনা দেয় সারাদেশ বাংলাদেশ হলেও রাজবাড়ী পাকিস্তান হয়ে থাকবে।

এ সময় জেলার সকল অঞ্চল থেকে মুক্তি বাহিনীর বিভিন্ন দল রাজবাড়ীতে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হতে থাকে। ইতোমধ্যে শহিদুন্নবী আলম, ইলিয়াস মিয়া, সিরাজ আহম্মেদ, আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, রফিকুল ইসলাম তাদের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিকে ঘিরে রাখে। এদের সাথে জেলার পাংশা থেকে জিল্লুল হাকিম, আব্দুল মতিন, নাসিরুল হক সাবু, আব্দুল মালেক, সাচ্চু, আব্দুর রব তাদের দল নিয়ে যুদ্ধে যোগদান করেন।

অবাঙ্গালী বিহারীরা শহরের রেল লাইনের উত্তর পাশে অবস্থান নেয়। তারা রেলওয়ে লোকোসেড থেকে ড্রাই আইস ফ্যক্টরী পর্যন্ত রেলের মালগাড়ী দিয়ে বাধা তৈরী করে।

মুক্তিবাহিনীরা শহরের দক্ষিণ দিক থেকে গুলি চালাতে থাকে। তবে মালগাড়ী থাকার কারণে কোন ফল হয় না। সে সময় গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান আবি মাগুরার শ্রীপুর থেকে মর্টার আনে। ওই মর্টার দিয়ে গুলি ছুড়লে বিহারীরা পিছু হটে। পরাজয় অনিবার্য মনে করে বিহারীরা আতœসমর্পন করার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর অভিমুখে যেতে থাকে। তবে তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কয়েক হাজার অবাঙ্গালী বিহারী নিহত হয়।

ওই যুদ্ধে দিয়ানত আলী শহীদ হন এবং ইলিয়াস হোসেন হন গুরুতর আহত। যে কারনে ১৮ই ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় রাজবাড়ী।

রাজবাড়ী মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে আজ ১৮ই ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।