মেহেদুল হাসান আক্কাছ, রাজবাড়ী টুডে ডট কম: সারা দেশে ১২অক্টোবর থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকার,পরিবহন, বাজারজাত করণ সহ সকল কর্যক্রমের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের জেলেরা সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা মানছে না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সংশিষ্ট প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মদদে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে সু-কৌশলে জেলেরা ইলিশ শিকার সহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ডিম ওয়ালা মা ইলিশ ও জাটকা সহ বিভিন্ন ধরনের ইলিশে এক শ্রেনীর প্রভাবশালীদের ফ্রীজ ভর্তি হচ্ছে। জেলেরা কম দামে তাদের বাড়ীতে ইলিশ মাছ পৌছে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে কাউকে কাউকে জরিমানা ও জেল দিলেও উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে অধিকাংশ ইলিশ শিকারীদের।
আগে ইলিশ ক্রেতারা বাজারে যেত ইলিশ কিনতে আর এখন মোবাইলে যোগাযোগ করে প্রতি কেজি বড় ইলিশ ২-৩শ টাকায় ক্রেতাদের বাড়ীতে পৌছে দেয়। ভোর বেলায় যেখানে সেখানে হেটে হেটে বিক্রি করা হয় ইলিশ। জানা গেছে, দালালের মাধ্যমে প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা কর্তা বাবুরা প্রতি জেলের নৌকা থেকে দুই থেকে তিন হাজার টাকা নেয়। বিনিময়ে জেলেদের নির্বিগ্নে ইলিশ ধরার কৌশল শিখিয়ে দেওয়া হয়। টাকা জমা দেওয়া জেলের নৌকায় নির্ধারিত সংকেত চিহ্ন দেওয়া থাকে।
অভিযানের সময় তাদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। আবার মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় অভিযানের অগ্রীম বার্তারা। যারা টাকা দেয় না দালালরা তাদের সুকৌশলে ধরিয়ে দিয়ে অভিযান স্বার্থক করে।
জানা যায়, দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকার মজি মন্ডল স্প্রীটবোট চালক নুরুন নবী ও উপজেলা মৎস্য অফিসের একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন এলাকার জেলেদের এই অপকর্মে সহযোগিতা করেন। এরা দৌলতদিয়া ঘাট নৌ-পুলিশ ফাড়ি ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও উপজেলা মৎস্য অফিসের ম্যানেজের দায়িত্ব পালন করেন।
এ ব্যাপারে দেবগ্রাম ইউপি চেয়াম্যান আতর আলী সরদার আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিদিন পদ্মা নদী থেকে কমপক্ষে দুইশ মন ইলিশ ধরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে করনেশন, অন্তর মোড় সহ পদ্মা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নৌকা প্রতি দুই থেকে তিনশ টাকার বিনিময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইলিশ ধরে। পুলিশ তাদের আটক করে না।
তিনি আরও বলেন, আমি ওসি সাহেবকে ফোনে জানালেও কোন ফল হয়নি। এ থেকেই বোঝা যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উপজেলায় ইলিশ ধারা ও বিক্রির কৌশল পরিবর্তন।