দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী টুডে ডট কম: রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দির বিভিন্ন ইউনিয়নে দুই সপ্তাহে ৩ টি শালিসে চুল কর্তন, জুতা পেটা করা, দোবরা মারা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় শালিসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত একের পর এক অভিযোগ উঠলেও উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন প্রথমে সবর থাকলেও পরে নিরর দর্শকের ভুমিকা পালন করছে।
এদিকে কয়েকটি জাতিয় দৈনিকে বহরপুর ইউনিয়নে গরু চুরির অভিযোগে বে-আইনী শালিসের মাধ্যমে যুবকের মাথার চুল কর্তনের বিষয়টি নজরে আসে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম রকিব হায়দার স্বাক্ষরিত “বহরপুর ইউনিয়নে গরু চুরির অভিযোগে, বে-আইনি শালিসের মাধ্যমেমাথার চুল কর্তন পূর্বক নির্যাতন বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন প্রসঙ্গে।”
২৯ সেপ্টেম্বর বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি চিঠি প্রদান করে উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা। কেন নির্বাহী কর্মকর্তার চিঠির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় নাই?
এ প্রসঙ্গে বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘চিঠিটি যখন থানায় আসে আমি তখন মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্য কিশোরগঞ্জে ছিলাম এরপর পূজার নিরাপত্তা নিয়ে সময় পার হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নে ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে গরু চুরির চেষ্টার অপবাদে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে রিজা শেখ (২২) যুবকের চুল কর্তন করা হয়া। ৬ অক্টোবর ইসলামপুর ইউনিয়নের সাটুরিয়া গ্রামের এক গৃহবধুর পরিবারকে সমাজচ্যুত এবং জনসন্মূখে ১১বার দোবরা মারা হয় শালিসে। ১১ অক্টোবর জঙ্গল ইউনিয়নে ফাতেহা অনুষ্ঠানে বসে কিয়াম করার প্রতিবাদ করায় ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনার প্রতিবাদ করায় গ্রাম্য শালিসে ৫১ বার জুতাপেটার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
সূত্রটি আরো জানায়, দুর্গাপূজার অনুদান বিতরণ এবং আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের অনুপস্থিতি এবং দুর্গাপূজার সপ্তমীর দিনে বালিয়াকান্দি থানা চত্বরে বিভিন্ন পূজা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের উপস্থিতি তে কমিউনিটি পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তার উপস্থিত না থাকা সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্নের জন্ম দেয়। এই দ্বন্দের সুযোগ নিচ্ছে স্থানীয় শালিসদার-রা, এমনটা মনে করছেন অনেকেই। আর এসব কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলছে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে মানবাধিকার কর্মী রঘুনন্দন শিকদার বলেন, সামাজে ন্যায়-অন্যায় থাকতেই পারে তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে যারা জড়িত তাদের সাজা নিশ্চিত করতে না পারলে এমন ঘটনা ঘটেই যাবে।