স্টাফ রিপোর্টার॥ পবিত্র ঈদুল আজহার পূর্বে রাজবাড়ী জেলা সদরের বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মির্জা বদিউজ্জামান বাবু ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মান্নান মিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ শতাধিক দুঃস্থ ভিজিএফ কার্ডধারীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কার্ড রেখে দিয়ে চাল আত্মসাতের অভিযোগে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ মান্নান গাজী।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে দরখাস্তটি দেন তিনি। এরআগে গত ১১ সেপ্টেম্বর বসন্তপুর ইউপি’র ভিজিএফ কমিটির সদস্যগণ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
বসন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান গাজী কর্তৃক ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে দাখিলকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১০ সেপ্টেম্বর বসন্তপুর ইউনিয়নের ২হাজার ৪৪৩টি পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণের লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক ২৪ হাজার ৪৩০ কেজি চালের ডিও প্রদান করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মীর্জা বদিউজ্জামান বাবু উক্ত চাল উত্তোলন করে বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেন। তিনি তার ভাড়াটিয়া ব্যক্তি ও বহিস্কৃত ইউপি আ’লীগ সেক্রেটারী আব্দুল মান্নান মিয়াকে চুড়ান্ত অনুমোদনকৃত তালিকার ১ থেকে ৬১০নং ক্রমিকের ব্যক্তিদের চাল বিতরণ ও মাস্টাররোলে টিপসহি গ্রহন করার দায়িত্ব প্রদান করেন। আঃ মান্নান মিয়া চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত স্লিপ নিজের কাছে রেখে স্লিপধারী ব্যক্তিদের তাড়িয়ে দেন। চাল না দিয়ে স্লিপ রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে আঃ মান্নান মিয়া তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ফলে তারা চাল না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যান। আঃ মান্নান মিয়া ইউনিয়ন পরিষদে আসার পূর্বে উল্লেখিত ৬১০ জনের মধ্যে ৪০/৫০ জন চাল পান। স্লিপধারী ব্যক্তিরা চাল না পেয়ে ভিজিএফ কমিটির সদস্যদের নিকট স্লিগগুলো ফিরিয়ে দেন। ভিজিএফ কমিটির নিকট এ ধরণের প্রায় ২৫০টি স্লিপ গচ্ছিত রয়েছে। তাদের তদন্ত মোতাবেক ৬১০ জনের মধ্যে ৫৬০ জনই চাল পাননি। অথচ তাদের বরাদ্দকৃত চাউল পরিষদেও গচ্ছিত নেই।
আব্দুল মান্নান গাজী অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ধারণা উক্ত চাল চেয়ারম্যান ও আঃ মান্নান মিয়া ভুয়া মাস্টাররোল তৈরী পূর্বক আত্মসাত করেছে। উক্ত দরখাস্তের অনুলিপি এলজিআরডি মন্ত্রীর দপ্তরেও দাখিল করা হয়।
এরআগে গত ১১ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ভিজিএফ কমিটির সদস্যদের দাখিলকৃত দরখাস্তেও একই অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তবে অভিযোগের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বসন্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান মীর্জা বদিউজ্জামান বাবু বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। গত ৯ ও ও ১০ সেপ্টেম্বর দুই দিনে আমরা ২ হাজার ৪৪৩ জন ভিজিএফ কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ করেছি। তবে প্রায় দেড় শতাধিক কার্ডধারী চাল নিতে না আসলে তাদের চাল সর্বসম্মতিক্রমে ইউনিয়নের অন্যান্য দুঃস্থ্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।