(রাজবাড়ী টুডে ডট কম) ডেস্ক: ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বিপদজনক স্থানে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক হিসাবে বলা হয়, গোটা বিশ্বের প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এক জরিপে জানায়, বিগত দুই যুগে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। ভারতে ইতিমধ্যে স্তন ক্যান্সারকে ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই এ সম্পর্কে সবার প্রাথমিক ধারণা থাকা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে।
ভারতের ফোরটিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট টিনা সাপরা এবং মেট্রোপলিস হেলথকেয়ারের কনসাল্টিং নিউট্রিশনিস্ট ড. বন্দনা মাথুর এখানে এমন কিছু খাবারের কথা জানিয়েছেন যা স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এগুলো চিনে নিন।
১. তিসি : তিসি পেতে পারের বিচি বা তেল হিসাবে। এতে আছে ওমেগা-৩এস, লিগনাস এবং ফাইবার। এগুলো ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে ঢাল হিসাবে কাজ করে। দইয়ের সঙ্গে তিসি মিশিয় আরো পুষ্টি যোগ করতে পারেন।
২. ব্রাজিল নাট : এই বাদামে রয়েছে সেলেনিয়াম, ফাইবার এবং সাইটোক্যামিকেল। টিউমার বেড়ে ওটার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তোলে ব্রাজিল নাট। প্রতিদিন এক মুঠো বাদামই যথেষ্ট।
৩. রসুন : এর গুণাগুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এতে আছে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান অ্যালিয়াম। টিউমারের বেড়ে ওঠা কমিয়ে আনে রসুন। স্তন ক্যান্সার ছাড়াও কোলোরেক্টাল এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য দারুণ উপকারী রসুন।
৪. আনার : স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কাজের আনার। এর পলিফেনোলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের বেড়ে ওঠা থামায়। প্রতিদিন ফলটি খেলে উপকার মিলবে।
৫. গাঢ় সবুজ পাতাবহুল শাক : বাঁধাকপি, পালং শাকসহ যেকোনো গাঢ় সবুজ রংয়ের শাক দেহে পুষ্টি ও খনিজ জোগায়। এদের আছে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধী ক্ষমতা। ফাইবার, ভিটামিন বি, সাইটোকেমিক্যাল, ক্লোরোফাইলসহ আছে অনেক কিছু।
৬. স্যামন মাছ : ওমেগা-৩এস এবং ভিটামিন বি১২ ও ডি এর উৎস। বিশেষ কিছু ভিটামিন বি১২ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। সেদ্ধ বা রান্না বা পুড়িয়ে খেলেই উপকার মিলবে। এর সঙ্গে রসুন ও সবুজ শাক দিতে পারেন।
৭. ব্রোকোলি : ফুলকপি পরিবারের এক সবজি। ব্রোকোলিতে আছে সালফোরোফেন এবং ইন্ডোলস। অস্বাভাবিক কোষের বর্ধন প্রতিরোধ করে এসব উপাদান। স্তন, ব্লাডার, লিম্ফোমা, প্রোস্টেট এবং লাং ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।
৮. গ্রিন টি : নিয়মিত গ্রিন টি গ্রহণ করলে স্তন ক্যান্সার থেকে ঝুঁকিমুক্ত হওয়া যায়। এই চায়ের সাইটোকেমিক্যাল কাজটি করে। প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি আপনাকে স্তন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখবে।
৯. মরিচ : যেকোনো মরিচে আছে সাইটোকেমিক্যাল এবং পুষ্টি উপাদান। মরিচ ক্যান্সারের বৃদ্ধি ঠেকাতে কাজ করে। সবুজ মরিচ ক্লোরোফাইলসমৃদ্ধ হয়ে থাকে। অন্ত্রের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের কার্যকারিতা নষ্ট করে। লাল মরিচে থাকে ক্যাপসাইসিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যারোটেনয়েড। এ সবই স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।
১০. হলুদ : মসলা হিসাবে বহুল প্রচলিত খাদ্য উপাদান। এতে আছে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান। হলুদে স্তন, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল, ফুসফুস এবং ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ রয়েছে।
এ ছাড়াও ওয়ালনাট, বেরি ফল, শস্যদানা, লেগুমি ইত্যাদি খাবারে রয়েছে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান। তবে এগুলো খেলেই চলবে না। বিশেষজ্ঞরা অ্যালকোহল, সিগারেট, প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট, নিম্নমাত্রার ফ্যাট এবং নিম্নমাত্রার কার্বোহাইড্রেট স্ন্যাক্সও এড়িয়ে চলতে বলেছেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া