খন্দকার রবিউল ইসলাম(রাজবাড়ী টুডে)ঃ দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যমান ফেরি ও ঘাট সংকটে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যহত হয়ে আসছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যহতের কারন নদীতে তীব্র স্রোত ও ঘাট এবং ফেরি সংকট।
ফলে, উভয় ঘাট এলাকায় নদী পারের অপেক্ষায় আটকা পড়ছে প্রায় প্রতি দিন কয়েক হাজারেও বেশি যানবাহন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব গাড়ির যাত্রী ও চালকদের।
পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙনের কারনে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৪টি ফেরিঘাটের মধ্যে দুটি ঘাট বন্ধ রয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তীব্র স্রোত ও ফেরি সংকট। সে কারণে দৌলতদিয়া থেকে মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া পর্যন্ত নৌপথে ফেরি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় আটকা পড়ে সহস্রাধিক ট্রাক সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ফেরিঘাট থেকে গাড়ির সারি ৪/৫ কিলোমিটারের বেশি থাকছে প্রতিনিয়ত।
সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালের বিশাল পার্কিং ইয়ার্ড ট্রাকে পরিপূর্ণ রয়েছে। অন্যদিকে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ এলাকা পর্যন্ত সড়কের একপাশে দুই লাইনে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি রয়েছে। এধরনের চিত্র চলছে গত ১মাসেরও বেশি সময় ধরে।
ফলে সেখানে তীব্র যানজট লেগে আছে সব সময়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও বাস চালকদের দেওয়া তথ্য মতে জানা যায়, আটকে পড়া ওই গাড়িগুলোর মধ্যে রাতে ছেড়ে আসা বিভিন্ন পরিবহনের দেড় শতাধিক বাস ও থাকছে প্রতিদনিই।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, এ নৌপথে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ প্রায় ৪ হাজারেরও বেসি যানবাহন পারাপার হয়। এ যানবাহন পারারের জন্য বর্তমানে এরুটে ১৯টি ফেরি চালাচল করার কথা থাকলেও সেখানে বিভিন্ন সমস্যার কারনে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।গুরুত্ব বিবেচনায় দৌলতদিয়ায় মোট চারটি ফেরিঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর ফেরিঘাটটি ভাঙনের কবলে পড়ে গত ৬ আগস্ট পদ্মায় বিলীন গেছে। অনেক চেষ্টা করেও ওই ঘাটটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি।
ভাঙনের কবলে পড়ে ৩ নম্বর ফেরিঘাটটি গত সোমবার বিকেল থেকে বন্ধ রয়েছে। এখন চালু আছে ২ ও ৪ নম্বর ঘাট। ৩ নম্বর ঘাটটি চালু করতে সেখানে মেরামতকাজ চলছে।
এদিকে চলাচলকারী ফেরিগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় সেগুলো প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ছে। পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকায় ফেরিগুলো দেড়-দুই কিলোমিটার ভাটিপথ ঘুরে চলাচল করছে। এতে ফেরি পারাপারে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন দেড় গুণ সময় বেশি লাগছে। এতে ফেরির ট্রিপ সংখ্যাও অনেক কমে গেছে। আবার স্রোতের প্রতিকূলে চলতে গিয়ে অনেক ফেরি প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ছে।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ বলেন ১৯/১৪টি ফেরির কথা বললেও এ রুটে ৭/৮টি ফেরি চলাচল করে।
সুত্র মতে এরুটে ১৯টি ফেরির মধ্যে চলাচল করছে রো রো বড় ৭টি, কে টাইপ ৩টি ও উটিলিটি ৪টি সহ মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।
বাকী ৫টি ফেরির বিভিন্ন সমস্যা ও নদীর স্রোতে চলতে না পারার কারন দেখিয়ে বন্ধ রাখা হচ্ছে।