আশিকুর রহমান(রাজবাড়ী টুডে): রাজবাড়ীতে কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ২ সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে অপহরণ করে টানা ১২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ এবং ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগে জেলা সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় রঘুনাথপুর গ্রামের ওই গৃহবধূ গত ২৯ আগস্ট আজিবর শেখ (৩৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেছে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলাটি রেকর্ড এবং কোন আসামী আটক হয়নি।
অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ জানায়, রাজবাড়ী জেলা সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় রঘুনাথপুর গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে আজিবর শেখ তাকে প্রায়ই কু-প্রস্তাব দিতো। এ কু-প্রস্তাবে সে রাজী না হওয়ায় আজিবর তার ক্ষতি করার জন্য পাঁয়তারা করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ আগস্ট সে বড় রঘুনাথপুর গ্রামে তার স্বামীর বাড়ির সামনে রাস্তার উপর হাটতে গেলে আজিবর ও তার অজ্ঞাত ৩ সহযোগী গামছা দিয়ে তার (গৃহবধূর) মুখ বেধে তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নিয়ে যায়। এসময় ধস্তাধস্তিতে তার মুখের গামছা খুলে গেলে সে চিৎকার দিলে আজিবর তার মুখে চেতনা নাশক ঔষুধ দিয়ে তাকে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর ওই দিন রাত ১১টার দিকে আজিবর তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। টানা কয়েকদিন আজিবর তাকে এভাবে আটকে রেখে ধর্ষণের পর তার স্বামীর মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ৫লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এছাড়া আজিবর তার তাকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে কিছু সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
এরপর গত ২৭ আগস্ট সে (গৃহবধূ) কৌঁশলে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে এক রিকশাওয়ালার কাছে জানতে পারে যে সে কুষ্টিয়া জেলায় আছে। পরে ওই রিকশাওয়ালার সহায়তায় সে বাসে উঠে তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে এসে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।
পরে গত ২৯ আগস্ট সে আজিবর ও তার অজ্ঞাত ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৫/৭/৮/৯ (১)/১০/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল বাশার মিয়া বলেন, মামলার বাদীকে আমরা খোঁজার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে খুঁজে পাইনি। এছাড়া সে থানায় এসে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগও করেনি। সে থানায় এসে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত আজিবরের সাথে কথা বলার জন্য বড় রঘুনাথপুর গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।