খন্দকার রবিউল ইসলাম (রাজবাড়ী):
অবশেষে রাজবাড়ী শহররক্ষা বাঁধে নামে মাত্র সংস্কার শুরু হয়েছে। রবিবার বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকায় পদ্মা নদী চলে এসেছে শহর রক্ষা বাঁধের কয়েক ফুটের মধ্যে। এদিকে, ফারাক্কার পানির প্রভাবে পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। যে কোন সময়য়ে ভেঙ্গে যেতে পারে শহর রক্ষা বাঁধ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সঠিক সময়ে কাজ না করায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়ন এর উড়াকান্দা নয়নসুখ সহ কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ছে অসহায় মানুষের সংখ্যা। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এর অবহেলা কেই দায়ীকরছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো।
ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর রাজবাড়ী জেলার অংশে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গত দুই দিনে নদীতে পানি বৃদ্ধি না হলেও তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জেলা সদরের বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দ ও লালগোলা এলাকার ১হাজারেও বেশি পরিবার তাদের ঘরবাড়ী ও মালামাল সড়িয়ে নিতেও হিমসিম খাচ্ছে।
আর সেই কারনেই রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ থেকে মাত্র দশ ফুটের মধ্যে চলে এসেছে নদী। যে কোন সময় শহর রক্ষা বাঁধটি ভেঙ্গে যেতে পারে। উড়াকান্দা মিয়াবাড়ী, মোল্লাবাড়ী, লালগোলা এলাকায় দেখা যায় ভাঙনের ভয়াবহতা। সেখানে নদী দিয়ে বইছে ঘূর্ণায়মান তীব্র স্রোত।
নদী ভাঙ্গন দেখতে আসা সিরাজ খান বলেন, গত দুই দিন ধরে ফারাক্কার পানির প্রভাব এখানে পড়েছে। নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। যে কারণে ভাঙন শরু হয়েছে। ভাঙন থেকে বসতবাড়ী, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থানসহ কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌড়পদ সূত্রধর জানান, বরাট উইনিয়নে সাড়ে ৮ কিলো মিটার এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। জেলা সদরের উড়াকান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার ২৮০ মিটার স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে। এছাড়া ৫লাখ টাকা ব্যয়ে মিয়া বাড়ী এলাকায় ৫০ মিটার এবং লালগোলা এলাকায় ৫০ মিটার করে বাঁশ ও বালু ভর্তি বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে নদীর ঢেউ আর তীব্র স্রোতের সাথে তারা পেরে উঠছেন না। পুরো এলাকার নদী তীরের স্থায়ী ভাঙন রোধের লক্ষে ইতোপূর্বে দু’শত কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছিল। ওই প্রকল্পটি একনেকে পাস করা হলে রাজবাড়ী বাসীর আতংক দূর করা সম্ভব হতো।
তিনি আরো বলেন ভাঙন প্রতিরোধে ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০লক্ষ টাকা করে কাজ শুরু করা হয়েছে। আসা করা হচ্ছে ওই অর্থ ব্যয় করে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, শেষ সময়ে লোক দেখানো এ ভাবে বালুর বস্তা ফেলে নদীর ভাঙ্গন ঠেকানো যাবে না। স্থানীয়দের দাবি, স্থায়িভাবে নদী ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
তীব্র ভাঙ্গণের কারণে মোল্লা বাড়ী এলাকায় শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ দশ ফুটের মধ্যে চলে এসেছে। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাঁধটি ওই অংশ যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।